সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

নেত্রকোণায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন 

নেত্রকোণা প্রতিনিধি

নেত্রকোণায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন 

নেত্রকোণায় চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। মূলত ধান উদ্ধৃত্ত জেলা নেত্রকোণা। এ জেলায় উৎপাদিত ধান স্থানীয় কৃষকদের চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

নেত্রকোণা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। চলতি বোরো মৌসুমে বি-আর ২৮, বি-আর ২৯, হীরা-১, হীরা-২ হাইব্রিড-৭৫, ৮১, ৮৮, ৮৯ ও ৯১, সবুজ সাথী, জাগরনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করা হয়। 

গত বোরো মৌসুমে ব্রি-২৮ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগ ও ব্যাপক চিটা দেখা দেয়ায় মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা ব্রি ২৮ এর পরিবর্তে ব্রি-৮৮ জাতের ধান চাষে পরামর্শ দেয়ায় এবার নেত্রকোণার কৃষকরা বেশী করে ব্রি-৮৮ জাতের ধান চাষ করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কোন ধরনের রোগ বালাই না দেখা দেয়ায় হাওরাঞ্চলসহ উচু এলাকায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

কৃষি বিভাগ আশা করছে, এবার জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপাদিত হবে তা থেকে ৮ লাখ ২ হাজার ৬শ টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং আগাম বন্যা, ঝড় শিলা বৃষ্টি না থাকায় প্রচণ্ড রোদে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই ধান কাটা, মাড়াই ও শুকিয়ে কৃষকরা ফসল গোলায় তুলতে পারছেন। নেত্রকোণার হাওরাঞ্চল হিসেবে পরিচিত জেলার খালিয়াজুরী, মদন, মোহনগঞ্জ ও কলমাকান্দা উপজেলায় ইতোমধ্যে শতভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন হাওরাঞ্চল ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষি কাজে যান্ত্রিকীকরণের কারণে হাওরাঞ্চলসহ উঁচু এলাকায় এবার শ্রমিক সংকট নেই। কৃষকরা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে তাদের জমির ধান দ্রুত কেটে ফেলছেন। প্রান্তিক চাষীরা বছরের খোরাকির জন্য কিছু ধান সিদ্ধ করে ভালভাবে শুকিয়ে ঘরে সংরক্ষণ করছেন। 

মোহনগঞ্জ উপজেলার নলজুরী গ্রামের কৃষক সাত্তার মিয়া বলেন, এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রথম দিকে হাওরে ৯শ টাকা থেকে সাড়ে ৯শ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করেছি। আমার ৬০ কাঠা ক্ষেতে ৪শ মণ ধান হয়েছে।

নেত্রকোণা জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ‘চলতি বোরো মৌসুমে নেত্রকোণার কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী জমিতে বোরো ধান আবাদ করেন। প্রয়োজনীয় বীজ, সার, কীটনাশক হাতের কাছে পাওয়ায় এবং সরকারের পক্ষ থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে কৃষকরা তাদের জমিতে সঠিক সময় পর্যাপ্ত পানি দিতে পেরেছেন। 

নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক এবং জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি শাহেদ পারভেজ জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নেত্রকোণায় ৭৩০টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দেয়া হয়েছে। রোববার (১২ মে) পর্যন্ত হাওরাঞ্চলে শতভাগ ও উঁচু এলাকার ৮০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় তার জন্য জেলায় ইতোমধ্যে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে।

টিএইচ